জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রতিষ্ঠা হওয়ার একযুগ পার করলেও পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপ নিতে পারেনি। মেধাবী শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগীতার মধ্যে দিয়ে ভর্তি হলেও তারা পাচ্ছেন না তেমন সুযোগ- সুবিধা। প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী নানা সমস্যা আর সংকটের মধ্য দিয়ে তাদের শিক্ষাজীবন পার করছে। আবাসনসহ পরিবহন সমস্যা, শ্রেণিকক্ষ সংকট, মেডিকেল সেন্টার, এছাড়াও সমৃদ্ধ নয় গ্রন্থাগার ও সেমিনার কক্ষ। বিশুদ্ধ খাবারের পানির অভাব ও ক্যান্টিনে খাবারের ব্যবস্থা থাকলেও নিম্নমানের খাবার পরিবেশন। এতো সমস্যা থাকার ফলেও সমাধানের কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।
জানা যায়, বিলুপ্ত জগন্নাথ কলেজের (বর্তমানে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) ১২টি হল থাকলেও বর্তমানে সেগুলো বেদখল হয়ে আছে। ‘বাণী ভবন’ নামের একটি হলের এক অংশ দখলে থাকলেও সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীরা থাকেন। শিক্ষার্থীদের জন্য যে কয়টি বাস আছে সেগুলোও অনেকটা লক্কড়ঝক্কড়। তাছাড়াও মারাত্বক ঝুঁকি নিয়ে ‘বাদুড়ঝোলা’ হয়ে আসা যাওয়া করতে হয় শিক্ষার্থীদের।
লাইব্রেরি বা বিভাগীয় সেমিনারে থাকলেও পাঠদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বইয়েরও তীব্র অভাব রয়েছে। বিশ্ববিদ্যলয়টি ছোট হওয়ায় শ্রেণিকক্ষের সংকট প্রকট। এক ব্যাচ ক্লাস করলে অন্য ব্যাচ ক্লাসের অপেক্ষায় বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। আবার শ্রেণিকক্ষ এমন যে, সেখানে বসার জায়গা থাকে না। বিভাগীয় কমন কক্ষও নেই। আর পরীক্ষা থাকলে অন্যরা ক্লাস করতে পারে না। প্রায় বিভাগের একই অবস্থা।
এদিকে নাজুক অবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়টির চিকিৎসা ব্যবস্থার। নামে মাত্র একটি মেডিকেল সেন্টার রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য মাত্র ১ জন ডাক্তার। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এক যুগেও হয়নি কোন সমাবর্তন। বারবার আশ্বস্ত করলেও এখনো আয়োজন করতে পারেনি প্রশাসন। সম্প্রতি প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সমাবর্তনের আযোজন করবে । সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রায় ২মাস পেরিয়ে গেলেও কাজের কোন অগ্রগতি।
গত ৯ অক্টোবর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন জন্য ১ হাজার ৯২০ কোটি ৯৪ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেকে)। এ বিষয়ে জবি রেজিস্টার ওহিদুজ্জামান কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়ন জন্য টাকা অনুমোদন হলেও আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনো চিঠি দেয়নি একনেক। আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠি দিলেই আমরা কাজ শুরু করবো।’
মেডিকেল সেন্টারের কথা তুললে তিনি বলেন, ‘মেডিকেল সেন্টারে ১ জন ডাক্তার চিকিৎসা দিচ্ছেন, আমরা বিজ্ঞাপন দিয়েও কোনো ডাক্তার পাইনি।’
এ বিষয়ে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমানকে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন ধরেননি।
Discussion about this post