আন্তর্জাতিক ডেস্ক : খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকায় ভারতীয় বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় ২০০-৩০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে যে খবর ছড়িয়েছে সেটি মিথ্যা বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আসিফ গফুর। বরং পাকিস্তানি বিমানের তাড়া খেয়ে ভারতীয় বিমান পালিয়ে গেছে বলেও দাবি করেছেন এই সেনা কর্মকর্তা।
মঙ্গলবার দুপুরে ইমরান খানের নেতৃত্বে দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির জরুরি বৈঠকের পর এক বিবৃতিতে বলা হয়, ভারতীয় সরকার আরেকবার তাদের আত্মস্বার্থে বেপরোয়া কাল্পনিক দাবির আশ্রয় নিয়েছে। তারা যে স্থানে হামলা করার দাবি জানিয়েছে, সরেজমিনে পরিদর্শনের জন্য ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে ঘটনাস্থলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ভারত অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে যে আগ্রাসন চালিয়েছে, সময় ও স্থান অনুসারে পাকিস্তান তার জবাব দেবে।
বৈঠকে অংশ নেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র, প্রতিরক্ষা, অর্থমন্ত্রী ও তিন বাহিনীর প্রধান। বৈঠক শেষে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও জনগণকে যেকোনো পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
মঙ্গলবার টুইটারে পাকিস্তানের মেজর জেনারেল আসিফ গফুর লিখেছেন, ভারতীয় বিমান নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সীমান্ত লঙ্ঘন করলেও পাক বিমানবাহিনী যথাসময়ে ও কার্যকরভাবে সাড়া দিয়েছে। তাড়া খেয়ে পালানোর আগে বালাকোটের কাছে বোমা ফেলে গেছে। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ সেক্টরের ভেতর তিন থেকে চার মাইলের ভেতর ভারতীয় বিমান ঢুকে পড়েছিল।
একই কথা জানিয়েছে পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন দল পিটিআই। টুইটারে তারা লিখেছে, আমরা বুঝতে পারছি- এটি ভারতীয় নির্বাচনের বছর। কাজেই সীমান্তে তারা বেশ বেপরোয়াই থাকবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, পাকিস্তানি টহল বিমান তাদের তাড়িয়ে দিয়েছে।
এর আগে, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া এলাকায় বালাকোটের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় বিমানবাহিনীর বোমা হামলায় ২০০-৩০০ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে বলে দাবি করেন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব বিজয় কেশব গোখলে।
এক বিবৃতিতে তিনি জানান, নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে জয়েশ জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে বিমানবাহিনী। নিহত হয়েছেন জয়েশ-ই-মোহাম্মদের সিনিয়র কমান্ডাররা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানায়, বিমানবাহিনী তাদের ১২টি মিরেজ ২০০০ জেট বিমান এ হামলায় অংশ নেয় এবং ১ হাজার কেজি বোমা বর্ষণ করে অনেক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৬ সালে নিয়ন্ত্রণরেখার অপর পাশে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাতটি শিবিরে সার্জিক্যাল হামলা চালানোর দাবি করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। ওই বছরের প্রথম দিকে জম্মু ও কাশ্মীরের উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ওই অভিযান চালানো হয় বলে দাবি করেছিল ভারত।
Discussion about this post