কারকনিউজ ডেস্ক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিএনপি প্রার্থীর মৃত্যুর কারণে স্থগিত থাকা গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনের সংসদ নির্বাচন রবিবার (২৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টি, এনপিপি ও স্বতন্ত্রসহ পাঁচজন প্রার্থী।
রবিবার (২৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহন চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। এই আসনের ১৩২ টি ভোটকন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন পলাশবাড়ী ও সাদুল্লাপুর উপজেলার ৪ লাখ ১১ হাজার ৮৫৪ জন ভোটার।
নির্বাচনে ১৩২ জন প্রিসাইডিং অফিসার, ৭৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও এক হাজার ৫৭২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ডা. মো. ইউনুস আলী সরকার, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) এস এম খাদেমুল ইসলাম খুদি, জাতীয় পার্টির দিলারা খন্দকার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) মিজানুর রহমান তিতু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু জাফর মো. জাহিদ।
নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার (২৬ জানুয়ারি) সকালে পলাশবাড়ী ও সাদুল্লাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে ভোটগ্রহণের বিভিন্ন উপকরণ গ্রহণ করেন প্রিসাইডিং অফিসাররা। পরে তারা ভোট গ্রহণের সামগ্রী নিয়ে যান নিজ নিজ ভোটকেন্দ্রে। পলাশবাড়ী এসএম মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৬৪ টি এবং সাদুল্লাপুর বহুমুখী পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ৬৮টি ভোটকেন্দ্রের দায়িত্ব পালনকারী পুলিশ, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন) ও আনসার সদস্যদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া। নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তিন স্তরে সাজানো হয়েছে। ২০ প্লাটুন র্যাব ও বিজিবি, আড়াই হাজার পুলিশ, এক হাজার ৫৮৪ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত থাকবে নির্বাচনের মাঠে। এ ছাড়া একজন করে ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে দুই উপজেলার ২০ টি ইউনিয়নে সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম তফশীলের আটজন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের পর এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী ড. টিআইএম ফজলে রাব্বী চৌধুরী গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর মারা গেলে ৩০ ডিসেম্বর এই আসনের ভোটগ্রহণ বন্ধ থাকে। পরে ২৩ ডিসেম্বর পুনঃতফশীল অনুযায়ী ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীসহ চারজন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিলে পরদিন মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে তিনজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এদিন শুধু বৈধ ঘোষণা করা হয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র। এরপর প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীসহ প্রথম তফশীলের বৈধ প্রার্থী বাসদ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নিলে ভোটের মাঠে থাকেন আওয়ামী লীগ, জাসদ, জাতীয় পার্টি, এনপিপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা।
নির্বাচন উপলক্ষে শনিবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে সাংবাদিকদের বিফ্রিং করেছেন রংপুর র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, আমরা মনে করছি নির্বাচনের দিন অত্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, নিরাপদ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনটি উৎসবমুখর পরিবেশে করার জন্য পুলিশ ও বিজিবির পাশাপাশি প্রতিটি অঞ্চলে র্যাবের টহল বিদ্যমান থাকবে। পাশাপাশি র্যাবের গোয়েন্দা টিম বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সন্ত্রাসী ও নাশকতাকারীদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করবে। তাছাড়া র্যাবের ডগ স্কোয়াড ও বোম্ব স্কোয়াড টিম রেডি থাকবে। নির্বাচন পরবর্তী যে কোনও ধরনের সহিংসতা বরদাস্ত ও তাদের ছাড় দেওয়া হবে না বলেও জানান র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক।
পুলিশ সুপার প্রকৌশলী আবদুল মান্নান মিয়া বলেন, নির্বাচনের দিন সিভিলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ অন্যান্য সহযোগী বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এখানে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হবে। গত ৩০ তারিখের নির্বাচনের মহাযজ্ঞ যেহেতু আমরা ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। তাই এই একটি আসনের নির্বাচন আমরা চ্যালেঞ্জ মনে করছি না। আমরা আশা করি জনগণ উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের যাওয়া আসা খুবই নিরাপত্তার সাথে হবে।
Discussion about this post