বিনোদন ডেস্ক : সায়নী ঘোষ, এই প্রজন্মের অভিনেত্রী। একটু অন্য ধারার চিন্তাধারা বহন করেন তিনি। এক কথায় স্বাধীনচেতা। ‘একলা চলো’ ছবিতে সিঙ্গল মাদার। ‘চৌকাঠ’ ছবিতে চৌকস সাংবাদিক। অথবা ‘মায়ের বিয়ে’ ছবির এমন একটি মেয়ে যে মায়ের খেয়াল রাখে। এরকম বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের সন্তুষ্ট করেছেন অভিনেত্রী সায়নী।
হাতে রয়েছে পাঁচটির মতো ছবি। আসছে ফেব্রুয়ারিতে ‘রং নাম্বার’ রিলিজ। হইচই সিরিজে দেবালয় ভট্টাচার্যের ‘বউ কেন সাইকো’। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ছবিতে কাজ। এক কথায় ব্যস্ত সায়নী। সম্প্রতি ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজারকে একটি সাক্ষাৎতার দিয়েছেন তিনি। সেটি পূর্বপশ্চিম পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো-
আপনি ওয়েব সিরিজে জনপ্রিয় মুখ। ‘তিন কাপ চা’ বা ‘চরিত্রহীন’ ছবিতে আপনার কাজ মানুষের ভালো লেগেছে। কী মনে হয় সেন্সর নেই বলেই ওয়েব সিরিজের জনপ্রিয়তা বাড়ছে?
ওয়েব সিরিজে হাত খুলে কাজ করা যায়। এটা যেমন ঠিক তেমনি আমি একটা কথা বলতে চাই। ন্যুডিটি আর যৌনতা দেখালেই দর্শক সেটার দিকেই ছুটবে বিষয়টা এমন নয়। কোনও গল্প নেই, ন্যুডিটি দেখালেই হবে এই ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এক্ষেত্রে দরকার হলে ছুরি কাঁচি চালানো হোক একটু। হইচই সিরিজে খুব ইন্টারেস্টিং কাজ হচ্ছে। সেখানে গল্পের টানে মানুষ আসছে। এমন অনেক ছবি আছে যা কোটি টাকার ব্যবসা করেছে সেখানে বিন্দুমাত্র ন্যুডিটি নেই।
আমরা ন্যুডিটি আর যৌনতা নিয়ে এখনও শিশু?
গোটা ভারতবর্ষে যৌনতা নিয়ে অশিক্ষা রয়েছে। ন্যুডিটি দেখে টিআরপি বাড়ছে এটা দুঃখজনক। মানুষ নিজেকে এন্টারটেইন করার জন্য এমন মাধ্যম বেছে নিচ্ছে যেটা সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। যৌনতা খুব স্বাভাবিক বিষয়। আমাদের যেমন খিদে পায়, ঘুম পায় তেমনি। এই বোধটা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য স্কুলে সেক্স এডুকেশন দরকার।
আপনার কাজের প্রসঙ্গে আসি। ২০১৯ জায়গাটা কেমন?
রহস্য রোমাঞ্চ সিরিজ আসছে। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের সঙ্গে ‘অতিথি’ করেছি। ‘দ্বিখণ্ডিত’ আসছে। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জনা বসুর সঙ্গে। সায়ন বসুর একটা ছবি নিয়ে আমি খুব এক্সাইটেড। জয় সেনগুপ্তের বিপরীতে কাজ করব। এই অভিজ্ঞতার জন্য মুখিয়ে আছি। অভিরূপ ঘোষের ছবি আছে।
ইচ্ছে করে না বড় প্রযোজনা, বড় পলিচালকের সঙ্গে কাজ করতে?
অবশ্যই করে। আমি আশাবাদী যে নিশ্চয়ই সে অর্থে বড় পরিচালকের ছবিতে আমি কাজ করব। দরকার হলে তারা নিশ্চয়ই ডেকে নেবেন। তাদের সঙ্গে আলাদা করে তো যোগাযোগ নেই। আমি নতুন পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করছি। তারা খুব যত্ন করে কাজ করে।
আপনি পি আর এ দুর্বল?
আমার পি আর ম্যানেজার ভাস্কর রায় বলে আমায় পার্টিতে যেতে। যোগাযোগ বাড়াতে। আমি পারি না। কাজের জন্য সম্পর্ক তৈরি করতে পারব না।
ইন্ডাস্ট্রিতে একটা ধারণা আছে সায়নী আউটগোয়িং?
নাহ আউটগোয়িং নয়। স্ট্রেট ফরওয়ার্ড। মনে যা মুখে তাই। আমি খুব নিউট্রাল। ভুল বললে সেটা স্বীকার করতে পারি। বয়সের সঙ্গে ধৈর্যশীল হয়েছি। মানুষকে বুঝতে শিখেছি।
ধারাবাহিকে ফেরার কথা ভাবছেন?
ইন্টারেস্টিং চরিত্র হলে নিশ্চই করব। হ্যাঁ সময়টা কেমন হবে সেটা দেখতে হবে।
ইন্ডাস্ট্রিতে ‘মিটু’ বা ‘কাস্টিং কাউচ’র ঝামেলায় পড়েছেন?
আমাকে অ্যপ্রোচ করার পরিবেশ তৈরি হতে দেইনি। খুব সচেতন ভাবেই এটা করেছি। আমার ভাবতে খারাপ লাগে আজও সমাজে কাজের বাইরে অন্য কাজ নিয়ে এত কথা হয়। তবে যারা এই ‘মিটু’র লড়াই লড়ছেন তাদের সাহসকে কুর্ণিশ। ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সকলকে বলতে চাই আমরা সবাই নিজেদের কাছে খুব মূল্যবান। কেউ সাহস হারাইও না।
Discussion about this post