মাছুদ রানা, বিশেষ প্রতিবেদক : টাঙ্গাইল সদর উপজেলার পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের এলেংজানী নদীতে চলছে অবাধে বালু উত্তোলন। প্রশাসনেক বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে নেতাকর্মীদের নাম ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছে এই ড্রেজার। প্রাশাসন থেকে বার বার ড্রেজার ধ্বংস ও জরিমানা করা সত্বেও থেমে নেই বালু খেকো মহল। প্রায় সারা বছরই নদী থেকে অবাধে বালু উত্তোলন করায় দেখা দিয়েছে নদীর পাড় ভাঙ্গন। বাংলা ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় বিপাকে পড়েছে এলাকাবাসী।
জানাযায়, পোড়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের পাশেই বয়ে গেছে এলেংজানী নদী। নদীর পাড় ঘেষে রয়েছে বাজার ও জনবসতি। সেই সাথে নদীর এপার-ওপারে চাষ হয় অনেক ফসল। কিন্তু কতিপয় একটি মহল প্রশাসন ও নেতাকর্মীদের নাম ব্যবহার করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি করছে। প্রশাসন থেকে ড্রেজার ধ্বংস, জরিমানাসহ বার বার সর্তক করেও কোন লাভ হচ্ছে না। পোড়াবাড়ী ইউনিয়নের কাদের জোয়ারদার ও তার কিছু সহকর্মীদের সাহায্যে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করে এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্ত বিস্তার করে এই ড্রেজার পরিচালনা করছে। বর্তমানে তিনটি বাংলা ড্রেজার বসিয়ে দিন-রাত বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে তারা। এ নিয়ে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে তাদের হুমকি দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলতে পারে না। এলাকাবাসী স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও প্রশাসনের কাছে বার বার ড্রেজার বন্ধের চিঠি দিলেও কোন ফল পাচ্ছেন না। এলাকাবাসীর দাবি এলেংজানী নদীতে যেন কেউ ড্রেজার বসাতে না পারে। কিন্তু বালু খেকোরা অদৃশ্য কিছু ক্ষমতার কারনে প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাচেছ ড্রেজার।
এলাকাবাসী জানায়, প্রায় দুই বছর ধরে এই নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে। এরাতো সন্ত্রাসী, এদের সাথে আমরা কি করবো। আমরা গরীব মানুষ। এদের সাথে তো আমরা পারি না। আমাদের ক্ষতি হলেও তো তাদের কিছু যায় না। তারা টাকা কামানোর তালে ব্যস্থ। আমরা চাই সরকার যেন ড্রেজার পুরোদমে বন্ধ করে দেয়। আর যেন কেউ এ ব্যবসা না করতে পারে। আমরা চেয়ারম্যান ও কর্তৃপক্ষের কাছে অনেক অভিযোগ দিছি কিন্তু কিছুই হয় না।
ড্রেজার ব্যবসায়ী কাদের জোয়ারদার বলেন, আমি বালুর ব্যবসা করি। আর করবোই। মানুষের বাড়ি-ঘর তৈরি করার জন্য তো বালু দরকার আর আমি সেই বালু তাদের কাছে বিক্রি করবো। নদীতে ড্রেজার বসানো অবৈধ কিন্তু আমরা তো এই ব্যবসা করেই খাই। এ ড্রেজার কেউ বন্ধ করতে পারবো না। আপনাদের যদি কোন সমস্যা থাকে তাহলে পোড়াবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান, এমপি কে বলেন। তারা আমাকে বলুক যে আমি মানুষের ক্ষতি করছি।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট খোরশেদ আলম বলেন, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন জায়গায় অবৈধভাবে চলছে বালু উত্তোলন ও ব্যবসা। এরমধ্যে অনেক ব্যবসায়ী আছে যারা স্থানীয় নেতাকর্মীদের নাম ব্যবহার করে বালু ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। যারা এ ধরনের কাজ যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা মাঝে মধ্যেই ব্যবস্থা নিয়ে থাকি। কিন্তু কোন ভাবেই এই ড্রেজার বন্ধ করা যাচ্ছে না। তারপরও আমরা চেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছি নদীতে যে কোন প্রকার ড্রেজার না থাকে। এ বিষয়ে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
টাঙ্গাইল সদর উপজেলা ভূমি কর্তকর্তা সুখময় সরকার বলেন, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন নদীতে কিছু বালু খোকোরা অবৈধভাবে ড্রেজার ব্যবস্থা করে যাচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত ড্রেজারের উপর ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছি। তারপরও কিছু সংখ্যক বালু ব্যবসায়ী এ ব্যবসা করে যাচ্ছে। অতিশীগ্রই তাদের বিরুদ্ধেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Discussion about this post