শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অধ্যাপক, বরেণ্য লেখক ও পদার্থবিদ ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের ৬৭তম জন্মদিন আজ। প্রখ্যাত এই কথাসাহিত্যিক ১৯৫২ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন।
জাফর ইকবাল বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর অন্যতম পথিকৃৎ। নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার বড় ভাই এবং রম্য ম্যাগাজিন উন্মাদের সম্পাদক, লেখক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব ছোট ভাই। বাবা মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ফয়জুর রহমান ও মা আয়েশা খাতুন।
বাবার পুলিশের চাকরির সুবাদে তার ছোটবেলা কেটেছে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। জাফর ইকবাল ১৯৬৮ সালে বগুড়া জিলা স্কুল থেকে এসএসসি ও ১৯৭০ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন যথাক্রমে ১৯৭৫ ও ১৯৭৬ সালে। তিনি ১৯৮২ সালে ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি সম্পন্ন করেন।
১৯৯৪ সালে প্রবাস জীবনের ইতি টেনে দেশে ফিরে মুহম্মদ জাফর ইকবাল অধ্যাপক হিসেবে সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে যোগ দেন। বাংলাদেশে প্রথম কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইবার অপটিক ইন্টারনেট ব্যাকবোন নির্মিত হয় তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়। চলতি বছর তিনি শাবিপ্রবি থেকে অবসর নিয়েছেন।
সাহিত্যমনস্ক পরিবারের সন্তান জাফর ইকবাল খুব অল্প বয়স থেকেই লিখতে শুরু করেন। তিনি প্রথম বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখেন ৭ বছর বয়সে। তার প্রথম প্রকাশিত সায়েন্স ফিকশন গল্প ‘কপোট্রনিক ভালোবাসা’। এটি সাপ্তাহিক বিচিত্রায় প্রকাশিত হয়। তার লেখা অনেক কিশোর উপন্যাস থেকে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র ও নাটক নির্মিত হয়েছে। এ ছাড়া তিনি নিয়মিত কলাম ও বিজ্ঞান বিষয়ে লেখালেখি করেন।
যুক্তরাষ্ট্রে পড়ার সময় জাফর ইকবাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী ড. ইয়াসমিন হকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। ইয়াসমিন হক শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। তাদের দুই সন্তান ছেলে নাবিল ইকবাল ও মেয়ে ইয়েশিম ইকবাল।
গুণী এই লেখকের এ পর্যন্ত সায়েন্স ফিকশন, ভৌতিক রচনাবলি, শিশুতোষ রচনাবলি, ইতিহাস, কিশোর উপন্যাস, উপন্যাস, স্মৃতিচারণা, ছোটগল্পসহ দেড় শতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে।
তার উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘বিবর্ণ তুষার’, ‘আকাশ বাড়িয়ে দাও’, ‘দুঃস্বপ্নের দ্বিতীয় প্রহর’, ‘সবুজ ভেলভেট’, ‘কাঁচসমুদ্র’, ‘ক্যাম্প’, ‘মহব্বত আলীর একদিন’। ‘একজন দুর্বল মানুষ’, ‘ছেলেমানুষী’, ‘নুরূল ও তার নোটবই’, ‘মধ্যরাত্রিতে তিন দুর্ভাগা তরুণ’ তাঁর লেখা জনপ্রিয় ছোটগল্প। ‘কপোট্রনিক সুখ দুঃখ’, ‘ত্রিনিত্রি রাশিমালা’, ‘একজন অতিমানবী’, ‘ফোবিয়ানের যাত্রী’, ‘ফিনিক্স’, ‘অক্টোপাসের চোখ’ ইত্যাদি জাফর ইকবালের লেখা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী।
Discussion about this post