আরব অঞ্চলের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ইয়েমেন। দেশটিতে গত তিন বছর ধরে যুদ্ধ চলছে। একসময়ের সমৃদ্ধশালী দেশ ইয়েমেন আজ দুর্ভিক্ষে পতিত, যুদ্ধে বিপর্যস্ত। পুঁজিবাদী-সাম্রাজ্যবাদী দুনিয়ার ষড়যন্ত্র-চক্রান্তে দেশটির মানুষ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
ইয়েমেনের দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি তৈরি করার প্রধান কুশীলব আরব বিশ্বের মোড়ল সৌদি আরব। ইয়েমেনে প্রায় আড়াই বছর ধরে সৌদি আরবের নেতৃত্বে চলছে অবরোধ। জাতিসংঘের বিভিন্ন সাহায্য সংস্থা শনিবার (৮ ডিসেম্বর) জানিয়েছে, সহিংসতায় ইয়েমেনের অর্থনৈতিক এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), শিশু তহবিল ইউনিসেফ এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে মানবিক বিপর্যয়ে থাকা ইয়েমেনে দুই কোটি লোক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
খাদ্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত এক জরিপের বরাতে বিবৃতিতে বলা হয়, ইতিমধ্যে এক কোটি ৫৯ লাখ লোক প্রতিদিন ক্ষুধা নিয়ে ঘুম থেকে জাগে।
কোনো দেশ দুর্ভিক্ষে আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হতে ইন্টিগ্রিটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি) নামে জরিপটি ব্যবহার করা হয়।
আইপিসি জানিয়েছে, তীব্র ও মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা এ জনসংখ্যা দেশটির ৬৭ শতাংশ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ইয়েমেনে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সমন্বয়ক লিস গ্রান্ডি বলেন, আইপিসি আমাদের যে বার্তা দিয়েছে, তা ভীতিকর।
ওয়াইএফপির প্রধান ডেভিড বিসলেই বলেন, দেশটিতে খাদ্যাভাব বাড়ছে বলে জরিপটিতে আমরা দেখতে পাই।
২০১৫ সালের মার্চে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটের বিমান হামলা শুরু হলে ইয়েমেনে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে।
বিসলেই বলেন, সেখানে আমাদের সহায়তা বাড়াতে হবে। লাখ লাখ ইয়েমেনিকে উদ্ধার করতে দেশটির সব জায়গায় প্রবেশের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। যদি এমনটি না পারি, তবে খাদ্যাভাবের কারণে একটি প্রজন্মকে আমরা হারিয়ে বসতে পারি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ইয়েমেন যুদ্ধে এখন পর্যন্ত অন্তত ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
Discussion about this post