টাঙ্গাইলের ঘাটাইল, কালিহাতী ও সখীপুর উপজেলার বিভিন্ন স্পটে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির মহোৎসব চলছে। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়া ও ক্ষমতাশীন দলের নাম মাত্র নেতাকর্মীদের সহায়তায় পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে বর্ষাকালে ঐ এলাকা গুলোতে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বাড়ছে।
জানাযায়, ঘাটাইল উপজেলার দেওপাড়া, টেগুড়ি চালা, ঢেলুটিয়া ও ঘোড়ামারা, কালিহাতী উপজেলার মরিচা, সখীপুর উপজেলার সাপিয়ার চালা, বাগেরবাড়ি, ইন্দারজানী (গড়বাড়ি), বহেড়াতৈল, আড়াংচালা, আমতৈল, আমগাছ চালা ও গিলাচালা নামকস্থান থেকে অবাধে লালমাটির পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, বন বিভাগের বিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তাদের জ্ঞাতসারে স্ব স্ব স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এক শ্রেণির ব্যবসায়ী রীতিমতো বেকু বসিয়ে দিনরাত ট্রাক, মাহিন্দ্র ট্রাক ও ড্রাম ট্রাক দিয়ে ওইসব মাটি স্থানীয় ইটভাটা সহ বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করছে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, দিনে মাটির ট্রাক কম আসা-যাওয়া করলেও রাত ৮টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত শতাধিক ট্রাক দিয়ে মাটি নেয়া হয়। ঘাটাইলের দেওপাড়া, টেগুড়ি চালা, ঢেলুটিয়া ও ঘোড়ামারা এলাকায় একটি চক্র যার নেতৃত্বে রয়েছে দেওপাড়ার ইউপি সদস্য কামাল হোসেন, বারইপাড়ার কামরুল, কালিহাতীর সিংনা গ্রামের শিবলু স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রভাব খাটিয়ে পাহাড় কেটে মাটি বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ করে স্থানীয়রা। কালিহাতী উপজেলার মরিচা, সখীপুরের সাপিয়ার চালা, বাগেরবাড়ি, ইন্দারজানী (গড়বাড়ি) এলাকার একটি চক্র বুড়িচালার শহীদ ও মরিচকুড়ি গ্রামের রুস্তম আলী, বহেড়াতৈল, আড়াংচালা, আমতৈল, আমগাছ চালা ও গিলাচালা এলাকায় বহেড়াতৈল ইউপি সদস্য হায়দর, স্থানীয় সোহেল, মেহেদী, আরিফ, হাইসাব, মজনু, হাসমত ডাক্তার, পান্নু, আজিজ ও নাফিকুল অবাধে লাল মাটির পাহাড় কেটে বিক্রি করছেন।
কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ী বলেন, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা, বন বিভাগের বিট ও রেঞ্জ কর্মকর্তাদের মৌখিক অনুমতি নিয়েই তারা পাহাড়ের মাটি কাটছেন। তাছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদেরও মাঝে মাঝে টাকা দিয়ে সমর্থন নিতে হয়। দিনশেষে তাদের হাতে দিনমজুরির টাকাই থাকে। কোন কাজ নাই তাই তারা মাটির ব্যবসা করে কোন রকমে চলছে।
টাঙ্গাইল বন বিভাগের বহেড়াতৈল রেঞ্জ অফিসার মো. আলাল খান বলেন, তিনি এ রেঞ্জে নতুন এসেছেন। বন বিভাগের ভূমির পাশে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে বলে তিনি শুনেছেন। তবে এ বিষয়ে তিনি সরেজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। তাছাড়া, ব্যক্তিমালিকাধীন জায়গা কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের কিছু করণীয় নেই।
সখীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আমিনুর রহমান বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না। এ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) মোশতারী কাদেরী বলেন, তিনি পাহাড় কাটা বা মাটি কেটে জমির শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।
Discussion about this post