টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এম. কামরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডাক্তার পরিচয়ে রোগীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সে উপজেলার সল্লা ইউনিয়নের কাগমারি পাথাইলকান্দি গ্রামের হাতেম আলী তালুকদারের ছেলে।
গত শনিবার ভূক্তভোগী ও প্রতারণার শিকার হয়ে উপজেলার আকুয়া গ্রামের জুয়েল (হিমু) নামের এক ব্যাক্তি ওই নামধারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কালিহাতী থানায় অভিযোগটি দায়ের করেন।
জানা যায়, কামরুল ইসলাম বর্তমানে চিকিৎসক পরিচয়ে এলেঙ্গা পৌরসভার চিনামুড়ায় ‘হোরাইয়া মেডিকেল হল’ নামক ফার্মিসীতে প্রতি শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রোগী দেখে থাকেন। সহযোগি হিসেবে কাজ করেন তার ছোট ভাই রেজাউল হোসেন। উপজেলার সল্লায় প্রামানিক মার্কেটে ‘মা মেডিকেল হল’ নামে ঔষধের দোকান এবং রোগী দেখার চেম্বারও রয়েছে তার।
কামরুল ইসলামের প্রেসক্রিপশনে প্যাডের ডেজিগনেশনে ‘মা ও শিশু, চর্ম যৌন, ই,এন,টি ও সার্জরীতে বিশেষ অভিজ্ঞ, এম. কামরুল ইসলাম, ডিএমএস (চট্টগ্রাম) ইউএইচডি-এইচ, ইউএস-(চট্টগ্রাম) সি.এইচ.আর এন্ড আর.এস চট্টগ্রাম, জেনারেল ফিজিশিয়ান, রেজিঃ নং এস- ৪০০১ উল্লেখ রয়েছে।
এ বিষয়ে জুয়েল হিমু বলেন, তিনি মা ও শিশু, চর্ম যৌন, ইএনটি ও সার্জারীতে বিশেষ অভিজ্ঞ পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছেন। কামরুল ইসলামের নিকট চিনামুড়ার আব্দুল মালেকের স্ত্রী নাকের পলিপাসের চিকিৎসা করতে গেলে তার ওষুধ সেবন করার পর অন্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। শনিবার দুপুরে আমি তার নিকট চিকিৎসা করতে গেলে আমার নাকের মাংস বৃদ্ধি পেয়েছে, তার ঔষধে সব সেরে যাবে কিন্তু এতে ৬ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানান। আমার তো এরক রোগ নেই বললে, নামধারী চিকিৎসক কামরুল ইসলাম কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে সাধারণ মানুষকে হয়রানীর হাত থেকে রক্ষা করতে কালিহাতী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
কামরুল ইসলামের ব্যাপারে তার এলাকায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, তিনি জাবরাজান বিএইচ দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল ও গোহালিয়াবাড়ি ফাজিল মাদ্রাসা
থেকে আলীম পাশ করেন। তার প্রেমে জরিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে চট্টগ্রাম চলে যান। সেখানে একটি গার্মেন্সে চাকরি করতেন তিনি।পাশাপাশি অবশর সময়ে পাশের একটি ফার্মেসীতে টাকার বিনিময়ে ফার্মেসীর সকল কার্যক্রম শিখেন। কয়েকবছর পর পরিবার তাদের সম্পর্ক মেনে নিলে তারা বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর সল্লা প্রামানিক মার্কেটে মা মেডিকেল হল নামের একটি ফার্মেসী খুলে বসেন। ইতিপূর্বেও রোগী দেখার প্যাড, ভিজিটিং কার্ড ও দোকানের সাইনবোর্ডে ‘ডা: কামরুল ইসলাম’ ব্যবহার করার অভিযোগে কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদপ্রকাশিত হয়।
শুধু তাই নয়, (২০১৬ সালের ৪ ডিসেম্বর) স্থানীয় একটি এনজিও ‘পষশিক পর্ষদ সংস্থা’র ম্যানেজারকে চায়ের সাথে চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে ৪৫ হাজার টাকা লোপাটের অভিযোগেও বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। স্থানীয়দের সহযোগিতায় বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হয়েছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো এক ব্যক্তি জানান, কামরুল ইসলাম মানুষের কাছ থেকে ওষুধের অতিরিক্ত দাম, অপ্রয়োজনীয় ওষুধ দিয়ে থাকেন। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এ ব্যাপারে কালিহাতী থানার (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন জানান, আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার হবে।
Discussion about this post