টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার ভট্রবাড়ী গ্রামের সম্মান শ্রেণিতে পড়ুয়া নুরুন্নাহার ইতি (১৯) নামের এক গৃহবধুর মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে।
শ্বশুর বাড়ির লোকজন একে আত্মহত্যা বললেও নিহতের বাবার পরিবার তা মেনে নিতে নারাজ। তারা একে নৃশংশ হত্যা বলে অভিযোগ করেন।
মধুপুর থানা পুলিশ গতকাল শুক্রবার বেলা ১১ টায় লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
জানা যায়, মধুপুর উপজেলার ভট্রবাড়ী গ্রামের জলিলের স্ত্রী নুরুন্নাহার ইতি গোপালপুর সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা বিষয়ে সম্মান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি ধনবাড়ী উপজেলার বলিভদ্র ইউনিয়নের বাগুয়া গ্রামের আব্দুল কদ্দুসের মেয়ে। স্বামীর বাড়ি থেকে তিনি কলেজে ক্লাস করতেন। সামনের সপ্তাহে তার পরীক্ষা ছিল।
নিহত ইতির কাকা সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ ভুট্রো জানান, ছয় মাস আগে মধুপুরের ভট্রবাড়ীর মেছের আলীর ছেলে জলিলের সাথে ইতির বিয়ে হয়। এ সময় জলিলকে যৌতুক দেয়া হয়েছে। বিযের পর থেকে নানা বাহানায় আরও যৌতুক নেয়ার চেষ্টায লিপ্ত হয় জলিলের পরিবার। সর্বশেষ কিছুদিন আগে ব্যবসার কাজে আরও ১ লাখ টাকা দাবি নিয়ে পারিবারিক কলহ চলছিল। ভাতিজী তিন মাসের অন্ত:সত্ত্বা ছিল দাবি করে আব্দুল হামিদ ভুট্রো বলেন- জলিলের পরিবার ইতিকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করছে।
ইতির মা আছমা বেগমের অভিযোগ, ইতির স্বামী জলিল চাকরির সুবাদে ঢাকায় অবস্থানকালে জলিলের ছোট ভাই (দেবর) কলেজ পডুয়া জুয়েল ইতিকে নানা আপত্তিকর ইঙ্গিত করে উত্ত্যক্ত করতো। এনিয়ে উভয় পরিবারে অশান্তি হয়েছে। উল্টো নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ইতি। পারিবারিক শালিসও বসেছে একাধিকবার। সাম্প্রতিক এ বিষয় নিয়ে ইতি স্বামীর সাথে উদ্বেগের কথা বললে জলিল ইতিকে ঢাকায় নিযে যাওয়ার উদ্যোগ নেয়। শুক্রবার সকালে ইতির স্বামীর কাছে ঢাকায় যাওয়ার কথা।
তিনি আরো বলেন,বৃহস্পতিবার রাতে ইতি তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করতে মোবাইল ফোনে জানান। তার ঘন্টা খানিক পর জলিলের পরিবারের ফোনে মেযের আত্মহত্যার খবর আসে। ইতির এমন মৃত্যু রহস্যজনক।
ভাই হায়দার আলীর অভিযোগ, রাতেই আমরা ঘটনাস্থলে গিযে বাড়ির পাশে জাম গাছের নিচে ইতিকে শুইয়ে রাখতে দেখি। ওই পরিবার জানায়- ফাঁসি থেকে তারা ইতিকে নামিয়ে ওখানে শুইয়ে রেখেছে। তিনি আরও জানান, তার বোনের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।
মধুপুর থানার ওসি সফিকুল ইসলাম জানান, লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ইউডি মামলা হওয়ার কথা বলে তিনি আরও জানান, মর্গের রিপোর্ট ও তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Discussion about this post