একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার ১৪ দিন চলছে। অভিযোগ রয়েছে, এখন পর্যন্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) তৈরি করতে পারেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমন বাস্তবতায় ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, ১০ ডিসেম্বর প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রতীক পাওয়ার আগেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরির চেষ্টা করবে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার (২১ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন ইসি সচিব।
হেলালুদ্দীন সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার আগে তফসিল ঘোষণার পর তৃতীয় দফায় নেতাকর্মীদের গ্রেফতার, মামলা, হয়রানি বন্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) কাছে চিঠি দেয় বিএনপি।
তৃতীয় দফায় বিএনপি বলেছে, তফসিলের পর তাদের ৫২৯ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে পাঁচজন মনোনয়নপ্রত্যাশীও রয়েছেন। দলটির অভিযোগ, ইসিকে বলার পরও থামছে না গ্রেফতার, হয়রানি, মামলা।
এ রকম বাস্তবতায় বুধবার হেলালুদ্দীন বলেন, ‘আগামীকাল বিশেষ আইনশৃঙ্খলা সভা হবে। নির্বাচনের আগে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) একত্রে একটি সভা করে থাকি। কিন্তু এবার রিটার্নিং কর্মকর্তাদের আলাদাভাবে ব্রিফ করেছি।’
‘ইতোমধ্যে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ব্রিফ করেছি। কালকে (২২ নভেম্বর) পুলিশ সুপারদের (এসপি) ব্রিফ করা হবে। ২৪, ২৫, ২৬ নভেম্বর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের আমরা ব্রিফ করব। এরপর আশা করি, প্রত্যেকটি নির্বাচনি এলাকায় একটা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত করতে পারব।’
ইসি সচিব বলেন, ‘সভায় আমরা আলোচনা করব, যাতে একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রস্তুত হয়। নির্বাচনের প্রতীক পেলেই সব দল প্রচার শুরু করবে। তার আগেই যাতে মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড পান, সে জন্য তাদেরকে নির্দেশনা প্রদান করা হবে।’
নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করছে উল্লেখ করে সচিব বলেন, ‘আমরা মনে করি, এবারের নির্বাচন অনেক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে।’
বৃহস্পতিবারের সভার বিষয়ে হেলালুদ্দীন জানান, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদার করা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নারী ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যাওয়া নির্বিঘ্ন করা, রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের নিরাপত্তা, নির্বাচনী সামগ্রী কেন্দ্রে পৌঁছানোর নিরাপত্তা, নির্বাহী ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিরাপত্তায় পুলিশ পাহারা দেওয়া, নির্বাচনের আগে, ভোটের দিন ও ভোট পরবর্তী সময়ের সার্বিক পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখার বিষয়গুলো নিয়ে বিশেষ সভায় নির্দেশনা থাকবে।
ইসি সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত নির্বাচন ভবনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় এই সভা হবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক, স্বরাষ্ট্র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগ ও সব মহানগর পুলিশের কমিশনার, উপমহাপরিদর্শক ও পুলিশ সুপারদের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। পুনর্নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ২৮ নভেম্বর; মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন ২ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর ও ভোটের দিন ৩০ ডিসেম্বর।
Discussion about this post