স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের নির্ধারিত মূল্যে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে ধান-চাল সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগে তিন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এছাড়া চার চাতালকলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। অপরদিকে চাল গুদামে মজুত করার জন্য শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণকারী হারুন অর রশিদের বিরুদ্ধেও কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে বলে জানা গেছে।
যাদের বদলির করা হয়েছে তারা হলেন, মির্জাপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলী আজম, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ এবং সহকারী খাদ্য পরিদর্শক মো. কায়েস।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্র মতে, এ বছর মির্জাপুর উপজেলায় সরকারিভাবে ১ হাজার ৪৮২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করার কথা। ৬ মে উপজেলার সাতজন চাতালকল মালিক জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হন। চাতালকল মালিকদের সঙ্গে চাল সংগ্রহের জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক চুক্তিবদ্ধ থাকলেও মির্জাপুরের খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও খাদ্যগুদাম সংশ্লিষ্টরা ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে চাল সংগ্রহ করেন। এজন্য গুদামের কর্মকর্তাদের কেজি প্রতি তিন থেকে পাঁচ টাকা করে ঘুষ দিতে হয়েছে বলে চাতাল কল মালিকেরা জানান।
‘মির্জাপুরে সরকারি চাল সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ’ টাঙ্গাইল জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গঠিত তদন্ত কমিটি ২৩ মে মির্জাপুর খাদ্য গুদাম ও চুক্তিবদ্ধ চাতালকল পরিদর্শন করেন। একই দিন খাদ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) পরিমল চন্দ্র সরকার, পরিচালক (সংগ্রহ) জুলফিকার রহমান ও কৃষিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা সুমন মেহেদী খাদ্য গুদাম ও চাতালকলগুলো পরিদর্শন করেন।
এদিকে খাদ্যগুদাম ও চাতালকল পরিদর্শন করে অনিয়মের সত্যতা পান সংশ্লিষ্টরা। পরে তদন্তদল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সরেজমিন পরিদর্শনের প্রতিবেদন জমা দেন।
তদন্তদলের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. নাজমানারা খানুম ও আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক জামাল হোসেন স্বাক্ষরিত পৃথক পত্রের মাধ্যমে মির্জাপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলী আজম, খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদ এবং সহকারী খাদ্য পরিদর্শক মো. কায়েস এই তিন কর্মকর্তাকে শান্তিমূলক এ বদলির আদেশ দেন।
এছাড়া উপজেলার দেওহাটা এলাকার ইন্নছ রাইচ মিল, তরফপুরের হেলাল উদ্দিন রাইচ মিল, কদিমধল্যার কাজী রাইচ মিল ও থ্রি ব্রাদার্স রাইচ মিলকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।
তিন কর্মকর্তার মধ্যে মির্জাপুর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলী আযমকে বরিশালের বাকেরগঞ্জ, উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক মোহাম্মদ তোফায়েল আহমেদকে শরিয়তপুরের গোসাইরহাট এবং সহকারী খাদ্য পরিদর্শক কায়েসকে ফরিদপুর সদরে বদলি করা হয়েছে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গঠিত তদন্ত দলের সদস্য এনএম রফিকুল আলম বলেন, গুদামে চাল মজুদের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের নিয়ন্ত্রণকারী হারুন অর রশিদ খাদ্য অধিদপ্তরের কেউ নন। তারপরও তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি জানান।
Discussion about this post