অর্থনীতি ডেস্ক : স্বর্ণ আমদানির জন্য লাইসেন্স পাওয়ার আবেদনপত্র বিতরণ শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) থেকে আবেদনপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। আগ্রহীদের অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আবেদন করতে হবে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। আর আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে অফেরতযোগ্য ৫ লাখ টাকা পে-অর্ডার।
অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের ক্ষেত্রে দিতে হবে আবেদনপত্রের সঙ্গে অনুমোদিত ডিলারের লাইসেন্সের কপি, ব্যাংক লাইসেন্সের কপি, স্বর্ণ ক্রয়, সংরক্ষণ ও বিতরণ আদেশ-১৯৮৭ আওতায় লাইসেন্সের কপি, অফিসের মালিকানা বা ভাড়ার চুক্তিনামার কপি, আবেদনকারী অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞ জনবল, নিরাপত্তা ব্যবস্থা, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার সংক্রান্ত বিবরণীর উপযুক্ত প্রমাণাদি। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে এতদিন দেশে নীতিমালা না থাকায় এতদিন বৈধভাবে কেউ স্বর্ণ আমদানি করত না। চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে স্বর্ণ আসত। মাঝে মধ্যে শুল্ক গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ার পর জানা যেতো চোরাচালানিদের কারবার। স্বর্ণের চোরাচালান ঠেকাতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও তা থেমে ছিল না। গত বছর আপন জুয়েলার্সের ঘটনার পর সারা দেশে স্বর্ণের গয়না বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছিল জুয়েলারি মালিক সমিতি।
লাইসেন্সের মেয়াদকাল ইস্যুর তারিখ হতে দুই বছর। তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাস আগে ডিলার ব্যাংককে ২ লাখ টাকা নবায়ন ফি (অফেরতযোগ্য) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগের মহাব্যবস্থাপকের কাছে আবেদন করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈধ পথে দেশে স্বর্ণ না আসায় একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব হারায়,অপরদিকে পাচার হয়ে যাচ্ছে দেশের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা।
তাই এ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার স্বর্ণ আমদানি উন্মুক্ত করার জন্য স্বর্ণ নীতিমালার ওপর একটি গেজেট প্রকাশ করে। গত বছর ২৯ অক্টোবর এ নীতিমালা জারি করার পর কিভাবে স্বর্ণ আমদানি করতে পারবে, কারা আমদানি করবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপর দেয়া হয়।
স্বর্ণ নীতিমালা ৩.১ ধারা অনুসারে , ‘বর্তমানে স্বর্ণ আমদানি রীতি ও পদ্ধতির অতিরিক্ত হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ স্বর্ণালঙ্কারের চাহিদা পূরণে অনুমোদিত ডিলারের মাধ্যমে স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার আমদানির নতুন পদ্ধতি প্রবর্তন করা হবে। অনুমোদিত ডিলার নির্বাচনের কার্যক্রম বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সম্পন্ন করা হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক এ জন্য গাইডলাইন বা নির্ধারিত নির্ণায়ক নির্ধারণ করবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সবশের্ষ লাইসেন্সের আবেদনপত্র সংগ্রহের নির্দেশনা দিয়েছে। সূত্র মতে, আবেদনকারী নিবন্ধিত লিমিটেড কোম্পানি হলে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ন্যূনতম এক কোটি টাকা থাকতে হবে। আমদানিকৃত স্বর্ণবার ও স্বর্ণালঙ্কার নিরাপদে রাখার জন্য সাড়ে ৭০০ বর্গফুটের কার্যালয় থাকতে হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, স্বর্ণ আমদানির অনুমোদন দেয়ায় দেশে এখন বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি হবে এবং অর্থ পাচার কমে যাবে। এক্ষেত্রে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়বে।
Discussion about this post